-না আমার কাউকেই মনে পড়ে না, আর আমি মনে করতেও চাইনা।
-আচ্ছা থাক মনে করা লাগবে না, চা খাবো, চল ঝুপড়ীর দিকে যাই।
এভাবে আমি অভিকে যখনই তার মায়ের প্রসঙ্গে কিছু জিজ্ঞেস করি সে এড়িয়ে যায়। ব্যাপারটা এমন না যে সে তার মা কে ঘৃণা করে বা ওইরকম কিছু, আসলে তার মা তাকে জন্ম দেওয়ার সময় মারা যান। তারপর তার বাবা আবার বিয়েও করেন, কিন্তু অভিকে তিনি মা এনে দিতে পারেননি।
অভির সাথে আমার পরিচয় ভার্সিটির প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার শেষ দিন। এরপর আস্তে আস্তে আমাদের বন্ধুত্ব অনেক গভীর হলো , তবে আমরা কখনোই হালের তথাকথিত জাস্ট ফ্রেন্ড টাইপ ছিলাম না। একথা সত্যি যে আমার আর কোনো বন্ধু তার মতো না, সে সবার থেকে আলাদা হয়ে থাকে সবসময়। আরেকটা ব্যাপার হলো, সারাক্ষণ বইয়ের পাতায় গুঁজে থাকা ছেলেকে সাধারণত বন্ধু হিসেবে সবার পছন্দ হওয়ারও কথা না।
আজ আমাদের র্যাগ ডে, এরপর কে কোথায় চলে যাবো তার কোন ঠিকঠিকানা নেই। তাই আমি চাচ্ছিলাম আজ তার সাথে অনেক বেশি করে কথা বলে নিতে যাতে আগামী কয়েক দিন তাকে ফ্রি থাকার সুযোগ করে দিতে পারি।
ঝুপড়ীতে বসে চায়ে চুমুক দিয়ে কাপটা মুখের সামনে ধরে রেখে হাবিজাবি বকবক করছিলাম।
অভি আমার কথার দিকে মনোযোগ না দিয়ে কাপের দিকে তাকিয়ে আছে এক অদ্ভুত সুন্দর দৃষ্টিতে। আমি এক মুহুর্তের জন্য ভাবলাম, সে কি আমার হালকা রঙা লিপস্টিক রাঙানো ঠোঁটের দিকে চেয়ে আছে! চমকে উঠলাম মনে মনে! কিন্তু আমি ওকে যতটা জানি তাতে সে এভাবে তো তাকানোর কথা না। সরাসরিই জিজ্ঞেস করে বসলাম,
-কিরে বেটা, এভাবে তাকায়া কী দেখিস?
-ভাবিস না, তোকে দেখছিনা, আমি দেখছি তোর মুখের সামনে ধরা ধোঁয়া ওঠা কাপ। শীতের এই স্নিগ্ধ সকালে তোর মুখের সামনে ধরা চায়ের ধোঁয়া আর তোর মুখের উষ্ণ হাওয়া মিলে যেনো এক ধূসর মেঘ হয়ে জমে আছে। আমি এই মেঘ দেখছি। এই ক্ষণস্থায়ী মেঘের অপার্থিব সৌন্দর্য দেখছি। তোকে দেখার শখ আমার নাই।
আমি বোধহয় কিছুটা আহত হয়েছিলাম তার এই অতি দার্শনিক রিজেকশন খেয়ে।
চায়ের কাপটা মুখের সামনে ধরে রেখেই জিজ্ঞেস করলাম,
-আচ্ছা অভি, আমরা কি শুধুই ফ্রেন্ডস?
-এই, তুই কি কোনভাবে আমাকে প্রপোজ-ট্রপোজ করার কথা ভাবছিস?
-আরেহ না, এমনিই জানতে চাচ্ছি। তোর যদি কোন ফিলিংস থাকে তাহলে আজ বলে দে, আমি শুনে তোরে রিজেক্ট করে পৈশাচিক আনন্দ লাভ করি!
-তোরে হতাশ করতে আমার একটু খারাপও লাগছে কিন্তু আসলেই আমার ওইরকম কোন ইমোশন নাই। তুই তো জানিস আমি অলরেডি ঠিক করে রাখছি জীবনের উপর বিরক্তি আসলেই যেকোনো সময় স্বেচ্ছামৃত্যু গ্রহণ করে নিজের প্রতি সুবিচার করবো।
-তোর বয়স এখন ২৫, তারমানে আমরা এখনো অনেক বছর প্রেম করতে পারি। আরো ভেবে বল….
-তোর মতো অতিসুন্দরীর সাথে প্রেম করে আমি ফেঁসে যেতে পারি, তাই রিস্ক নিতে চাই না।
-আচ্ছা থাক প্রেম করতে হবে না আর, আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে, আগামী মাসেই আমি অন্যকারো একান্ত সম্পত্তিতে পরিণত হতে যাচ্ছি।
-সম্পত্তি নারে বোকা সম্পদ হবি তুই। আর এ তো খুশির সংবাদ রে! বিয়ে মানেই পূর্ণতা, হিউম্যান রেস টিকিয়ে রাখার সামাজিক উপায়।
-এই, তুই কি কোনভাবে আমাকে প্রপোজ-ট্রপোজ করার কথা ভাবছিস?
-আরেহ না, এমনিই জানতে চাচ্ছি। তোর যদি কোন ফিলিংস থাকে তাহলে আজ বলে দে, আমি শুনে তোরে রিজেক্ট করে পৈশাচিক আনন্দ লাভ করি!
-তোরে হতাশ করতে আমার একটু খারাপও লাগছে কিন্তু আসলেই আমার ওইরকম কোন ইমোশন নাই। তুই তো জানিস আমি অলরেডি ঠিক করে রাখছি জীবনের উপর বিরক্তি আসলেই যেকোনো সময় স্বেচ্ছামৃত্যু গ্রহণ করে নিজের প্রতি সুবিচার করবো।
-তোর বয়স এখন ২৫, তারমানে আমরা এখনো অনেক বছর প্রেম করতে পারি। আরো ভেবে বল….
-তোর মতো অতিসুন্দরীর সাথে প্রেম করে আমি ফেঁসে যেতে পারি, তাই রিস্ক নিতে চাই না।
-আচ্ছা থাক প্রেম করতে হবে না আর, আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে, আগামী মাসেই আমি অন্যকারো একান্ত সম্পত্তিতে পরিণত হতে যাচ্ছি।
-সম্পত্তি নারে বোকা সম্পদ হবি তুই। আর এ তো খুশির সংবাদ রে! বিয়ে মানেই পূর্ণতা, হিউম্যান রেস টিকিয়ে রাখার সামাজিক উপায়।
-জানিস আমার তেমন খারাপ কিংবা ভালো কিছুই লাগছে না। কেমন যেনো তোর মতো অনুভূতি হচ্ছে। তোর যেমন কিছুতেই কোন এক্সাইটমেন্ট নেই ঠিক আমারো সেরকম হচ্ছে।
-আমি তো তোর বিয়ে নিয়ে প্রচুর এক্সাইটেড! হয়তো তোর গায়ে হলুদে একটা বলিউডি ড্যান্সও মেরে দিতে পারি।
-আচ্ছা তোর কি সত্যিই খারাপ লাগছে না? আমাদের এতো বছরের এতো গভীর বন্ধুত্ব, আমার বিয়ে হয়ে গেলে তো আমরা আগের মতো আর মিশতে পারবো না।
-তোর নিশ্চয়ই মনে আছে আমি আগেই তোকে বলে দিয়েছিলাম আমাদের মধ্যে অন্যান্যদের মতো প্রেমমার্কা বন্ধুত্ব হোক আমি চাই না। যাতে আমাদের এই সময় গুলো পরে আর দুঃখের স্মৃতি না হয়ে দাঁড়ায়। যতদিন পাশে আছি ভালো আছি, দূরে গেলেও আমরা ভালো থাকবো।
-আমি তো তোর বিয়ে নিয়ে প্রচুর এক্সাইটেড! হয়তো তোর গায়ে হলুদে একটা বলিউডি ড্যান্সও মেরে দিতে পারি।
-আচ্ছা তোর কি সত্যিই খারাপ লাগছে না? আমাদের এতো বছরের এতো গভীর বন্ধুত্ব, আমার বিয়ে হয়ে গেলে তো আমরা আগের মতো আর মিশতে পারবো না।
-তোর নিশ্চয়ই মনে আছে আমি আগেই তোকে বলে দিয়েছিলাম আমাদের মধ্যে অন্যান্যদের মতো প্রেমমার্কা বন্ধুত্ব হোক আমি চাই না। যাতে আমাদের এই সময় গুলো পরে আর দুঃখের স্মৃতি না হয়ে দাঁড়ায়। যতদিন পাশে আছি ভালো আছি, দূরে গেলেও আমরা ভালো থাকবো।
আমি এরপর আর কিছু বলতে পারলাম না। দুজন দুজনের মুখোমুখি হয়ে চুপচাপ বসে থাকলাম অনেকক্ষণ। ওদিকে আমার ব্যাচের সবাই রীতিমতো হোলি খেলছে।
বিয়ের বছরখানেক পর আমি খুব করে চাচ্ছিলাম একবার তার সাথে দেখা করতে কিন্তু তাকে খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল। সে ফেসবুক-টুইটার কিংবা অন্য কোথাও নেই। একটা ফোন আছে তাও কখন কোথায় পড়ে থাকে তার ঠিক নেই। তাকে অসংখ্য কল দিয়ে সুইচ অফ পেয়ে আমি প্রাগৈতিহাসিক পদ্ধতি অনুসরণ করে তাকে একটা চিঠি লিখলাম। ঠিকানা দিলাম তার গ্রামের বাড়ির।
প্রায় মাস পেরিয়েও যখন চিঠিটা ফেরত এলো না তখন শিওর হলাম সে চিঠি পেয়েছে। প্রথম চিঠি পাঠানোর ঠিক ৪৭ দিন পর একটা চিঠি পেলাম। মাত্র পাঁচ লাইনের চিঠিতে সে লিখেছে, সে অনেক ভালো আছে আর গ্রামে একটা পুরোনো স্কুল সংস্কার করে সেখানে ছেলে মেয়ে পড়াচ্ছে।
এর কিছুদিন পর আমি জানতে পারলাম আমি মা হতে চলেছি, আমি তাকে এ খবর জানিয়ে আবার চিঠি দিলাম। এবার সে চিঠি পেয়েই সাথে সাথে আমাকে ফোন দিয়ে অভিনন্দন জানালো আর খুব সাবধানতা অবলম্বন করার উপদেশ দিয়ে আবার হারিয়ে গেলো।
এরপর আমি কেমন যেনো জীবন থেকে হারিয়ে যেতে থাকলাম, আমার স্বামীও আমার এই অবস্থা আর সহ্য করতে পারছিল না। সে আমাকে বাপের বাড়ী থেকে ঘুরে আসতে বললো।
এর মাসখানেক পরে আমার বিয়ে হয়ে গেলো। অভি ড্যান্স দেওয়া তো দূরে থাক বিয়েতেই এলো না। সে না আসাতে আমি কেনো জানি খুশিই হয়েছি।
বিয়ের বছরখানেক পর আমি খুব করে চাচ্ছিলাম একবার তার সাথে দেখা করতে কিন্তু তাকে খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল। সে ফেসবুক-টুইটার কিংবা অন্য কোথাও নেই। একটা ফোন আছে তাও কখন কোথায় পড়ে থাকে তার ঠিক নেই। তাকে অসংখ্য কল দিয়ে সুইচ অফ পেয়ে আমি প্রাগৈতিহাসিক পদ্ধতি অনুসরণ করে তাকে একটা চিঠি লিখলাম। ঠিকানা দিলাম তার গ্রামের বাড়ির।
প্রায় মাস পেরিয়েও যখন চিঠিটা ফেরত এলো না তখন শিওর হলাম সে চিঠি পেয়েছে। প্রথম চিঠি পাঠানোর ঠিক ৪৭ দিন পর একটা চিঠি পেলাম। মাত্র পাঁচ লাইনের চিঠিতে সে লিখেছে, সে অনেক ভালো আছে আর গ্রামে একটা পুরোনো স্কুল সংস্কার করে সেখানে ছেলে মেয়ে পড়াচ্ছে।
আচ্ছা চিঠিটা আমার যেহেতু মুখস্থ আছে তাই ওইটাই লিখে দিই:
"অতিসুন্দরী,
তোর ৩৩ লাইনের চিঠি পেয়ে অনেক খুশি ছিলাম গত ৩৩ দিন।
আমি তো মাস্টার হয়ে গেছি রে, দাদার রেখে যাওয়া স্কুলটাকে কিছুটা মানুষ করেছি, এখন গ্রামের বাচ্চাকাচ্চাদের পড়াই।
আমি ভীষণ ভালো আছি, প্রায় বেহেশতে আছি বলা যায়।
তুই তোর সহধর্মণাকে নিয়ে অতি সুখে আছিস ধরে নিয়ে চিঠি শেষ করলাম।"
আমার প্রথম বাচ্চা যখন আমার পেটে তখন আমার বয়স প্রায় ২৭, আর আমি একটা কর্পোরেট জবে থাকার কারণে শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপই ছিল। এরজন্যই হয়তো ৭ মাসের মাথায় নানা সমস্যা দেখা দিতে শুরু করলো। একসময় আমার অবস্থা এতোটাই খারাপ হয়ে গেলো যে ওই প্রেগন্যান্সি রাখা আর সম্ভব হলো না। আর্লি ডেলিভারি করে বাচ্চাটাকে লাইফ সাপোর্টে রাখার ১০ দিনের মাথায় সে মারা গেলো। আমার চোখের সামনেই আমার সদ্য জন্মানো ফুটফুটে মেয়েটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে রইলো।
এরপর আমি কেমন যেনো জীবন থেকে হারিয়ে যেতে থাকলাম, আমার স্বামীও আমার এই অবস্থা আর সহ্য করতে পারছিল না। সে আমাকে বাপের বাড়ী থেকে ঘুরে আসতে বললো।
আমি এখন প্লাটফর্মে বসে আছি আর ভাবছি কোথায় যাবো, নিজের বাড়িতে নাকি অন্য কোথাও?
বাড়িতে কল দিয়ে বললাম আমি কয়েকদিন এক বান্ধবীর বাড়িতে থেকে তারপর বাড়ি ফিরবো।
অভির নাম্বারে কল দিয়ে কাঙ্ক্ষিতভাবেই সুইচ অফ পেলাম।
ট্রেন চলছে আর আমার স্মৃতির চাকাও ঘুরছে, কতশত স্মৃতি এসে ভীড় করছে। আমি ভাবছি অভির কাছে আমি কেনো যাচ্ছি! সে যে আমার সাথে কোন কিছুতেই জড়াবে না তাতো সে পরিস্কার বলে দিয়েছে বহুবার।
বাড়িতে কল দিয়ে বললাম আমি কয়েকদিন এক বান্ধবীর বাড়িতে থেকে তারপর বাড়ি ফিরবো।
অভির নাম্বারে কল দিয়ে কাঙ্ক্ষিতভাবেই সুইচ অফ পেলাম।
ট্রেন চলছে আর আমার স্মৃতির চাকাও ঘুরছে, কতশত স্মৃতি এসে ভীড় করছে। আমি ভাবছি অভির কাছে আমি কেনো যাচ্ছি! সে যে আমার সাথে কোন কিছুতেই জড়াবে না তাতো সে পরিস্কার বলে দিয়েছে বহুবার।
-অভি তুই তো অসাধারণ রান্না করিস রে!
-বাবার কাছে শুনেছি আমার মা ও নাকি অসাধারণ রান্না করতো, হয়তো ডিএনএ তে ছিল।
-তা তুই বিয়ে করলিনা কেন?
-বিয়ে করে কারো কাছে ঋণী হতে চাই না, এমনিতেও আমার অনেক ঋণ, শুধু ওই মাতৃদুদ্ধ-ঋণটা বাদে!
-বাবার কাছে শুনেছি আমার মা ও নাকি অসাধারণ রান্না করতো, হয়তো ডিএনএ তে ছিল।
-তা তুই বিয়ে করলিনা কেন?
-বিয়ে করে কারো কাছে ঋণী হতে চাই না, এমনিতেও আমার অনেক ঋণ, শুধু ওই মাতৃদুদ্ধ-ঋণটা বাদে!
-আমার খাওয়া শেষ।
-চল উঠোনে গিয়ে বসি, চমৎকার জোছনা আজ।
-হ্যাঁ চল।
-চল উঠোনে গিয়ে বসি, চমৎকার জোছনা আজ।
-হ্যাঁ চল।
আমি আর অভি পাশাপাশি বসে আছি সুপারিগাছ দিয়ে বানানো মাচাটাইপ বেঞ্চে। আমি গুনগুন করে গাইছি “আজ জোছনা রাতে সবাই গেছে বনে”। সেও গুনগুনিয়ে তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছিলো। গান মাঝপথে থামিয়ে আমি তার হাতে হাত দিলাম আর তার দিকে চোখ রেখে অপলক তাকিয়ে থাকলাম। সেও আমার দিকে নিস্পৃহ তাকিয়ে রইলো।
আমি তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকলাম। অঝোর কান্নাপর্ব শেষে আমার হটাৎ হলো জানিনা, শাড়ীর আঁচল নামিয়ে ব্লাউজের হুক একটা একটা করে খুলতে শুরু করলাম। সবগুলো খুলে উন্মুক্ত করে দিলাম সদ্যস্ফীত স্তনযুগল। অভি আশ্চর্যের সাথে অভিভূত হয়ে অপলক তাকিয়ে শুধু দেখে যাচ্ছিল আমার এই অতি আশ্চর্যজনক কাজ। একটা শব্দও বেরোয়নি তার সুন্দর কণ্ঠস্বর থেকে।
আমি তার মাথাটা টেনে আমার বুকের কাছে নিয়ে ধরলাম, সে মুখে ধরে নিলো আমার মাতৃত্বের নিদর্শন, সদ্য জন্মানো শিশুর মতো পান করে যেতে থাকলো আমার সেই ফুটফুটে মেয়েটার জন্য উৎপন্ন হওয়া এই জীবনরস। আর আমি অতি মমতায় তার মাথায় হাত বুলিয়ে যাচ্ছি।
- 20/09/16
COMMENTS